মৌলভীবাজারের কুলাউড়া থানার দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টা অভিযান শেষে বাড়িটি থেকে শিশুসহ ১৩ জনকে আটক করেছে সিটিটিসি ইউনিট।
শনিবার (১২ আগস্ট) সকালে অভিযান শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন সিটিটিসির প্রধান মোঃ আসাদুজ্জামান। আটককৃতদের মধ্যে ৬ জন নারী, ৪ জন পুরুষ রয়েছেন। এদের মধ্যে ৩টি শিশু রয়েছে। তাদেরকেও হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিটিটিসি প্রধান।
আটককৃতরা হলেন, সাতক্ষীরার শরীফুল ইসলাম (৪০), কিশোরগঞ্জের হাফিজ উল্লাহ (২৫), নারায়ণগঞ্জের খায়রুল ইসলাম (২২), সিরাজগঞ্জের রাফিউল ইসলাম (২২), নারায়ণগঞ্জের মেঘনা (১৭), নারায়ণগঞ্জের আবিদা (১২ মাস), পাবনার শাপলা বেগম (২২), জুবেদা (১৮ মাস), হুজাইফা (৬), নাটোরের মাইশা ইসলাম (২০), বগুড়ার সানজিদা খাতুন (১৮), সাতক্ষীরার আমিনা বেগম (৪০) ও হাবিবা বিনতে শফিকুল (২০)।
সিটিটিসির প্রধান জানান, অভিযান চালিয়ে বাড়িটি থেকে ৩ কেজি বিস্ফোরক ও ৩ লাখ ৬১ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া ওই বাড়িতে দীর্ঘদিন অবস্থান করার জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের মজুদ ছিল।
আরও পড়ুন- এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপে অধিনায়ক সাকিব
মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, বিনা বল প্রয়োগে আমরা তাদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। তাদের হেফাজতে নেওয়ার পরে আমরা জঙ্গি আস্তানায় ব্যাপক তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ৩ কেজি বিস্ফোরক ও ৫০টির মতো ডেটোনেটর উদ্ধার করি। যা দিয়ে গ্রেনেডসহ হাই এক্সপ্লোসিভ তৈরি করা হয়। জঙ্গি আস্তানা থেকে নারী-পুরুষ মিলিয়ে ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৪ জন পুরুষ ও ৬ জন নারী। এছাড়া ৩টি শিশুও ছিল। এছাড়া ওই বাড়িতে দীর্ঘদিন অবস্থান করার জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের মজুদ ছিল। ৩ লাখ ৬১ হাজার টাকা, প্রশিক্ষণ সামগ্রী, কমব্যাট বুট, বক্সিন ব্যাগ এবং কয়েক বস্তা জিহাদি বই জব্দ করা হয়েছে।
সিটিটিসি প্রধান আরও বলেন, আমাদের কাছে তথ্য ছিল নতুন একটি উগ্রবাদী সংগঠন ব্যাপক সংখ্যক লোকদের উগ্রবাদের দীক্ষা দিয়েছে। আমরা জানতে পারি, মৌলভীবাজারের যেকোনো একটি পাহাড়ে তারা তাদের আস্তানাটি তৈরি করেছে। গতকাল আমরা চূড়ান্ত তথ্য পাই। ঢাকায় আমরা একজনকে গ্রেপ্তার করেছি, যিনি এই জঙ্গি আস্তানা থেকে তার পরিবারকে আনার জন্য গিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, এটি নতুন একটি সংগঠন, এর নাম ইমাম মাহমুদের কাফেলা। বাংলাদেশে যেসব নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আছে, সেগুলোর বাইরে এটি একটি নতুন সংগঠন। এই সংগঠনের যে মূল ব্যক্তি তার নামও আমরা পেয়েছি। আশা করি আমরা তার পর্যন্ত পৌঁছাতে সক্ষম হব।
এর আগে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে শুক্রবার (১১ আগস্ট) সন্ধ্যা থেকে বাড়িটি ঘিরে রাখা হয়। পরে শনিবার (১২ আগস্ট) সকাল ৬টা থেকে অভিযান শুরু করে সিটিটিসি।