ঢাকা শহরের সব গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশ মুখে আগামীকাল শনিবার (২৯ জুলাই) বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ‘শান্তিপূর্ণ অবস্থান’ কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি। বিএনপির সঙ্গে একযোগে এই কর্মসূচি পালন করবে যুগপতে যুক্ত ৩৬টি দল ও বিভিন্ন জোট।
শুক্রবার (২৮ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর নয়া পল্টনে আয়োজিত ‘মহাসমাবেশে’ থেকে এ ঘোষণা দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শেখ হাসিনার পদত্যাগসহ নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের একদফা দাবিতে এই মহাসমাবেশ হয়েছে। ৩১ দফার ভিত্তিতে এই কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে বলে জানান বিএনপি মহাসচিব। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
আরও পড়ুন- রাস্তা বন্ধ করতে এলে আপনাদের চলার পথ বন্ধ করে দেবো
কর্মসূচি ঘোষণার সময় ফখরুল বলেন, ‘ভোটাধিকার হরণকারী কর্তৃত্ববাদী সরকারের পদত্যাগ, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন ও ইসি পুনর্গঠন, খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ ‘এক দফা’ দাবিতে শনিবার (২৯ জুলাই) বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ঢাকার সব প্রবেশ মুখে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করা হলো।’
সন্ধ্যা ৬টার সামান্য আগে বক্তব্য শুরু করেন মির্জা ফখরুল। বক্তব্যের শুরুতে তিনি তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। এসময় তিনি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিভিন্ন অবদানের কথা উল্লেখ করেন।
শনিবার ছুটির দিন হলেও সব দলকে নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করবো, বলেন ফখরুল। তিনি উল্লেখ করেন, ‘এই সমাবেশ পরিবর্তনের মাইলফলকের সমাবেশ।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যুগপৎ ধারায় যে আন্দোলন শুরু করেছি, সেই অনুযায়ী আগামীকালের কর্মসূচি ঘোষণা করছি। পরপর যে কর্মসূচিগুলো ঘোষণা করা হবে তার মধ্যে কালকের কর্মসূচি এটি- শনিবার বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ঢাকার সব গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশ মুখে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা করছি। আমাদের এই কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ। এটা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। আমরা আশা করব প্রশাসন এই কর্মসূচিকে শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে দিয়ে তাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করবে।’
আরও পড়ুন- ৫ বছরে সড়কে ৩৯৫২২ প্রাণহানিঃ যাত্রী কল্যাণ সমিতি
মির্জা ফখরুল বলেন, আজ আমরা একা নই, বিদেশি রাষ্ট্রগুলোও বলছে- এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
গত দুই দিনে মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, কিন্তু গ্রেপ্তার করে কি সমাবেশ আটকাতে পেরেছেন? পারেননি।
প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, দলীয় সরকারের আদেশ-নির্দেশে জনগণের বিপক্ষে অবস্থান নেবে না। অন্যায়, বেআইনিভাবে জনগণকে গ্রেপ্তার করবেন না।
মহাসমাবেশ সঞ্চালনা করেন আমান উল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম ও শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী।
মহাসমাবেশে আসা নেতাকর্মীদের হাতে ছিল জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা। তাদের হাতে থাকা ব্যানারে সরকারের পদত্যাগ ও খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানানো হয়।
আরও পড়ুন- বিএনপির মহাসমাবেশ শুরু
বিচার বিভাগ, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দলীয়করণ হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ফখরুল। প্রশাসনের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, ‘দলীয় সরকারের বেআইনি আদেশে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন না। আমরা জানি, এই দেশের জন্য আপনার কল্যাণ চান।’ নিয়ম মতো আইনের অধীনে কাজ করার আহ্বান জানান ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘বেআইনি গ্রেফতার ও হয়রানি বন্ধ করে কারাগারে আটকদের ছেড়ে দিন। আমাদের খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন। মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করুন। ভালো চাইলে একদফা দাবি মেনে নিয়ে পদত্যাগ করুন।’
গত ১৪ বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলার বাইরে পাচার হয়ে গেছে, বলে এসময় অভিযোগ করেন তিনি।