দেশের সকল সড়ক ও সেতুতে অ্যাম্বুলেন্স চলাচলের জন্য টোল ফ্রি করা সহ ৬ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাম্বুলেন্স মালিক কল্যাণ সমিতি।
রবিবার (২৩ জুলাই) রাতে সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফার সই করা এক চিঠিতে এসব তথ্য জানা যায়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সোমবার (২৪ জুলাই) দিনগত রাত ১২টা থেকে সারা দেশে অ্যাম্বুলেন্স চলাচলা বন্ধ থাকবে।
রবিবার রাতে পাঠানো ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রাইভেটকারের মতো অ্যাম্বুলেন্স থেকে বিআরটিএর ট্যাক্স নেওয়া বন্ধ করতে হবে। অতি দ্রুত অ্যাম্বুলেন্সের জন্য জাতীয় নীতিমালা তৈরি করতে হবে। অ্যাম্বুলেন্সের জন্য প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত টোল ফ্রি বাস্তবায়ন করতে হবে।
আরও পড়ুন- ডেঙ্গুতে রেকর্ড ২২৯২ জন হাসপাতালে, মৃত্যু ৯
দেশের প্রত্যেকটি হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্সের পার্কিং সুবিধা দেওয়া, অ্যাম্বুলেন্সে রোগী থাকা অবস্থায় প্রতিটি পাম্পে সিরিয়াল ছাড়া তেল এবং গ্যাস নেওয়ার সুযোগ দেওয়া এবং সড়কে হয়রানিমুক্ত ও নির্বিঘ্নে চলাচল নিশ্চিতের দাবিও রয়েছে তাদের।
রবিবার রাতে বাংলাদেশ অ্যাম্বুলেন্স মালিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘সোমবার মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া ধর্মঘট চলবে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত।’
তিনি বলেন, ‘এসব দাবি পূরণের জন্য আমরা ২০১৭ সাল থেকে আমরা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরছি। কিন্তু এসব সমস্যা সমাধানের কোনো উদ্যোগ কেউ নিচ্ছে না। এ কারণে বাধ্য হয়ে আমরা এই কর্মসূচি দিয়েছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সারাদেশে অ্যাম্বুলেন্স চলাচল বন্ধ থাকবে।’
ধর্মঘটের কারণে সারাদেশে গুরুতর অসুস্থ রোগীদের ভোগান্তির বিষয়ে জানতে চাইলে গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘ভোগান্তির বিষয়টি আমরাও বুঝতে পারছি। কিন্তু আমাদের এছাড়া আর কোনো উপায় নেই। দাবি পূরণের আশ্বাস পেলেই আমরা ধর্মঘট তুলে নেব।’
বিআরটিএর হিসাবে সারাদেশে নিবন্ধিত অ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যা ৮ হাজার ৩১৭টি। এর মধ্যে আট হাজারের মতো অ্যাম্বুলেন্স বেসরকারি বলে জানিয়েছে অ্যাম্বুলেন্স মালিক কল্যাণ সমিতি।
আরও পড়ুন- সুদানে দুপক্ষের ভারী লড়াই, নিহত ১৬ জন
এর আগে গত ২০ জুলাই জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ অ্যাম্বুলেন্স মালিক কল্যাণ সমিতি আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, অ্যাম্বুলেন্স এমন একটি সেবাখাত যেটা বাংলাদেশের বিআরটিএ কর্তৃক অবহেলিত। আমরা এই অবহেলা থেকে পরিত্রাণ চাই। জাপান থেকে আমরা অ্যাম্বুলেন্স আমদানি করি অ্যাম্বুলেন্স হিসেবে। বিআরটিএ রেজিস্ট্রেশন করি অ্যাম্বুলেন্স হিসেবেই, অথচ আয়কর দেওয়ার সময় দিতে হয় প্রাইভেটকার হিসেবে।
তারা বলেন, হাসপাতাল এবং ট্রাস্টি বোর্ডের অ্যাম্বুলেন্সের ক্ষেত্রে আয়কর নেওয়া হয় মাত্র ৫২ টাকা। অথচ বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে অতীতে নেওয়া হতো ৩০ হাজার টাকা, এ বছর থেকে ৫০ হাজার টাকা নেওয়া হবে বলে জানতে পেরেছি। সেবাখাতে একই দেশে দুই ধরনের আইন কি করে হয় সেটা আমাদের বোধগাম্য নয়।