ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার পাহাড়ভাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ে নৈশ প্রহরীসহ ৬টি পদে চাকরি দেওয়ার শর্তে বিদালয়ের অনুদান বাবদ মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়েও চাকরি দিতে না পারায় এবং টাকা ফেরত প্রদানে টালবাহানা করায় বিদ্যালয়ের সভাপতি ফজলুল হক ও প্রধান শিক্ষক কফিল উদ্দীনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এক ভুক্তভোগীর পরিবার।
রোববার (১৪ মে) দুপুরে আব্দুল হাকিম নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালতের বিচারক নিত্যানন্দ সরকার মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন- রোকাইয়াকে বাঁচাতে প্রয়োজন ৪ লাখ টাকা
রবিবার (১৪ মে) চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে দ:বি: ৪২০/৪০৬ ধারায় উক্ত মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগীর বড় ভাই আব্দুল হাকিম (৪৫)। তিনি সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নের পাহাড়ভাঙ্গা গ্রামের জয়নুল হকের ছেলে। বিচারক নিত্যানন্দ সরকার অভিযোগ তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ১৬ ফ্রেব্রুয়ারি নৈশ প্রহরী সহ ৬ টি পদে লোক নিয়োগের জন্য পাহাড়ভাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। য চাহিদা মোতাবেক যথারীতি বাদীর ভাই সোহেল রানা আবেদন দাখিল করেন। পরবর্তীতে বিদ্যালয়ের সভাপতি বাদীকে তার বাড়িতে ডেকে পাঠান। সেখানে নৈশ প্রহরীর চাকরির জন্য বিদ্যালয়ের সভাপতি ১২ লক্ষ টাকা অনুদান দাবি করেন। ওই সময় প্রধান শিক্ষক কফিল উদ্দীন ও সভাপতির কথায় সায় দিয়ে বলেন যে, ওই পরিমান টাকা দিলে তার ভাইয়ের চাকরি হবে। পরে সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক তাদের কাছে ১২ লাখ টাকা গ্রহণ করেন। এছাড়াও চাকরি দেওয়ার নাম করে তারা একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, চলতি বছরের ২১ মার্চ মঙ্গলবার ঠাকুরগাঁও সরকারি মহিলা কলেজে উক্ত নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। যে ফলাফলে ভুক্তভোগীর ভাইয়ের নাম ছিল না। বিষয়টি নিয়ে বাদী হাকিম অত্র স্কুলের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের নিকট কথা বলে ১২ লক্ষ টাকা ফেরত চাইলে তারা টালবাহানা শুরু করেন। দিনের পর দিন তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছিলেন ভুক্তভোগী পরিবার। এক পর্যায়ে টাকা ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানায় প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি। পরে ওই ভুক্তভোগী আদালতের আশ্রয় নেন।
এদিকে বাদী আব্দুল হাকিম বলেন, আমি আমার গরু ছাগলসহ জমি বিক্রি করে পাহাড়ভাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতিকে ১২ লক্ষ টাকা দিয়েছি। এখন আমি সর্বস্বান্ত। প্রশাসনের কাছে আমি এর সুবিচার চাই।
আরও পড়ুন- ঘূর্ণিঝড় মোখাঃ লন্ডভন্ড সেন্টমার্টিন
মামলার আসামিরা হলেন, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার পাহাড়ভাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ফজলুল হক এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কফিল উদ্দীন। ফজলুল হক (৬৩) পাহাড়ভাঙ্গা গ্রামের মৃত মনিরুদ্দীনের ছেলে এবং কফিল উদ্দীন (৫১) চিলারং গ্রামের খমির উদ্দীনের ছেলে।
এ বিষয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির এ্যাডভোকেট ইন্দ্রনাথ জানান, পাহাড়ভাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের নিয়োগ নিয়ে বাদী আব্দুল হাকিম তার ভাইয়ের জন্য স্কুলের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষককে ১২ লক্ষ টাকা দিয়েছিল। উক্ত নিয়োগে তাকে চাকরি দিতে পারেনি। পরবর্তীতে আব্দুল হাকিম টাকা ফেরত চাইলে তারা টাকা ফেরৎ দিতে অস্বীকার করে বিধায় আব্দুল হাকিম ২ জনের নামে এই মামলা দায়ের করে।