মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা (পশ্চিম) থানার পরিদর্শক মোহাম্মদ ইয়াসিন গাজি তিন আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডে আবেদন করেন। এই তিন আসামি হলেন—ক্রেনচালক আল আমিন, সহকারী রাকিব হোসেন ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিজিজিসির সেফটি ইঞ্জিনিয়ার জুলফিকার আলী। শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের ৪ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বাকি সাত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে আদালত প্রত্যেককে ২ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবীরা তাদের রিমান্ড বাতিল করে জামিন আবেদন করলে আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন। গত ১৬ আগস্ট মঙ্গলবার ভোর পাঁচটায় এই ঘটনায় নিহত রিয়া আক্তারের মামা মো. আফরান মণ্ডল বাবু বাদী হয়ে উত্তরা (পশ্চিম) থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ক্রেনচালক, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সিজিজিসির (চায়না) সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং প্রকল্পের নিরাপত্তা নিশ্চিতে দায়িত্বপ্রাপ্তদের আসামি করা হয়। কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ১৫ আগস্ট বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটের দিকে তিনি (বাদী) উত্তরা শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের সামনে অবস্থান করছিলেন। এ সময় তিনি তাঁর ভাই মনির হোসেনের একটি কল পান। কল থেকে জানতে পারেন তাঁর বোন রিয়াদের গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটেছে। তিনি সঙ্গে সঙ্গে উত্তরা জসিমউদ্দিন প্যারাডাইস টাওয়ারের সামনে আসেন। এসে দেখতে পান তাঁর বোন রিয়া এবং তাঁর ভগ্নিপতি রেজাউল করিম হৃদয়কে গাড়ি থেকে লোকজন টেনে বের করেছে। বাকিরা গাড়ির মধ্যে চাপা পড়ে আছে। গাড়ির ওপর ফ্লাইওভারের গার্ডার পড়ে আছে। উপস্থিত লোকজনের কাছে তিনি জানতে পারেন, ক্রেনের মাধ্যমে গার্ডারটি ওপরে ওঠানোর সময় তা কাত হয়ে নিচে পড়ে যায়। আমার বোন ভগ্নিপতি ও আত্মীয়-স্বজনকে বহন করা এই গাড়ির ওপর এসে পড়লে গাড়িটি চ্যাপ্টা হয়ে যায়। এ সময় গাড়ির ভেতরে থাকা আইয়ুব হোসেন রুবেল, ফাহিমা আক্তার, ঝর্ণা আক্তার, জান্নাতুল ও জাকারিয়া মৃত্যুবরণ করে।
চরম অবহেলাভরে ক্রেন পরিচালনা করায় ক্রেনের চালক, সিজিজিসি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের অবহেলাজনিত কাজের ফলে আমার ২ বোন, দুই ভাগনে–ভাগনি, ভাগনি জামাইয়ের পিতা মৃত্যুবরণ করেন। আমার ভাগনি রিয়া ও ভাগনি জামাই হৃদয় গুরুতর আহত হন। উত্তরা (পশ্চিম) থানা বাদীর এজাহার দণ্ডবিধির ৩০৪ (ক) ও ৩৩৮ ধারায় লিপিবদ্ধ করেন।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে যারা গ্রেপ্তার হয়েছেন তাঁরা এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন। দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ এবং তাদের সঙ্গে আর কারা সংশ্লিষ্ট তা যাচাই-বাছাই করার জন্য প্রত্যেককে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন। রিমান্ড আবেদনে আরও বলা হয়, আসামিরা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিয়োজিত থাকা সত্ত্বেও দুর্ঘটনায় সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা পালিয়ে যান।
উল্লেখ্য, গত বুধবার এই ১০ জনকে ঢাকা, গাজীপুর, সিরাজগঞ্জ ও বাগেরহাটে পৃথক অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়।
শীর্ষসংবাদ/নয়ন
আরও দেখতে পারেন-
⇒ গার্ডার দুর্ঘটনা: ক্রেনটি চালাচ্ছিলেন হেলপার
⇒ ভয়ংকর নাসিহাহ….
⇒ গার্ডার সরিয়ে গাড়ি কেটে ৫ মরদে উদ্ধার
⇒ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ
⇒ ডাটা তেল বা স্বর্ণের চেয়েও দামি: টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী