অজানাকে জানার আগ্রহ মানুষের আজন্ম। শুধু অজানাকে জেনেই শেষ হয় না আগ্রহ, জানা বিষয়কেই আরও বিশদভাবে জেনে, বিশ্লেষণ করে দেখার আগ্রহ তৈরি হয় মানুষের মাঝে। বর্তমানে জানা-শোনার অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে সংবাদ বা গণমাধ্যম।
মানুষের কল্যাণে সংবাদ প্রকাশ এবং কোনও বিষয়ে মানুষকে জানিয়ে দেওয়া সওয়াবের কাজ। আল্লাহ বলেন, ‘যারা ঈমান আনে এবং ভালো কাজ করে তাদের আপ্যায়নের জন্য আছে ফেরদাউসের বাগান।’ (সুরা কাহাফ, আয়াত : ১০৭)
মহাপবিত্র আল-কোরআনের সূরা আল-কাহাফ’র ১০৭ নম্বর [১৮ঃ১০৭] আয়াতে মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ্ রাব্বুল আল-আমীন বলেন-
إِنَّ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّٰلِحَٰتِ كَانَتْ لَهُمْ جَنَّٰتُ ٱلْفِرْدَوْسِ نُزُلًا
অর্থঃ ‘যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম সম্পাদন করে, তাদের অভ্যর্থনার জন্যে আছে জান্নাতুল ফেরদাউস।’
আরও পড়ুন- মুনাফিকের কাছে ভারী দুই নামাজ
হাদিসে ভালো কথাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তির মাধ্যম বলা হয়েছে। আদি বিন হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সাঃ) বলেন, ‘তোমরা এক টুকরা খেজুরের বিনিময়ে হলেও আগুন থেকে নিজেকে রক্ষা কোরো। খেজুরের টুকরা না পেলে তাহলে ভালো কথার মাধ্যমে নিজেকে রক্ষা কোরো।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৫৯)
সংবাদ প্রচারের ক্ষেত্রে অনেক সময় তথ্য যাচাই ও মিথ্যা সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার মতো ব্যাপার দেখা যায়, যা পুরোপুরি ইসলামের নীতি ও আদর্শের সঙ্গে সাংর্ঘষিক।
পবিত্র কোরআনের সূরা আল-হুজুরাতের ৬ নম্বর [৪৯ঃ৬] আয়াতে আল্লাহ্ ইরশাদ করেছেন,
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓا۟ إِن جَآءَكُمْ فَاسِقٌۢ بِنَبَإٍ فَتَبَيَّنُوٓا۟ أَن تُصِيبُوا۟ قَوْمًۢا بِجَهَٰلَةٍ فَتُصْبِحُوا۟ عَلَىٰ مَا فَعَلْتُمْ نَٰدِمِينَ
অর্থঃ ‘হে মুমিনগণ! যদি কোন পাপাচারী ব্যক্তি তোমাদের কাছে কোন সংবাদ আনয়ন করে, তবে তোমরা পরীক্ষা করে দেখবে, যাতে অজ্ঞতাবশতঃ তোমরা কোন সম্প্রদায়ের ক্ষতিসাধনে প্রবৃত্ত না হও এবং পরে নিজেদের কৃতকর্মের জন্যে অনুতপ্ত না হও।’
মিথ্যা সংবাদ পরিবেশনসহ যেকোনো বিষয়ে মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া গুরুতর পাপ। মানুষের কাছে সত্যকে মিথ্যা বলে প্রচার করা এবং মিথ্যাকে সত্য বলে বেড়ানো ভয়াবহ অপরাধ।
আরও পড়ুন- দিলেন প্রতিশ্রুতি, নিলেন ভোটের ওয়াদা
হজরত আবু বকর (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, একদিন আমরা রাসুলুল্লাহ (সাঃ)-এর কাছে বসা ছিলাম। তিনি বললেন, ‘আমি কি তোমাদের সবচেয়ে বড় পাপ সম্পর্কে জানাব না?’ রাসুল (সাঃ) কথাটি তিনবার বলেছেন। (সাহাবিরা সম্মতিসূচক কথা বলার পর)
তিনি বলেন, ‘আল্লাহর সঙ্গে শরিক করা, বাবা-মায়ের অবাধ্য হওয়া এবং মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া বা মিথ্যা কথা বলা।’
রাসুল (সাঃ) কথাগুলো বলার সময় হেলান দেওয়া ছিলেন। অতঃপর সোজা হয়ে বসে তা অনেকবার বলতে থাকেন। আমরা মনে মনে বলছিলাম, আহ, তিনি যদি চুপ হতেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৫১০)