বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার অংশ হিসেবে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
শনিবার (২৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে হাসপাতালে পৌঁছান বেগম জিয়া। বিএনপি চেয়ারপার্সনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ম্যাডামের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার বিষয়টি নির্ভর করছে চিকিৎসকদের ওপর। ওনার শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর যদি চিকিৎসকরা পরামর্শ দেন ভর্তি হওয়ায় জন্য তাহলে হবেন। না হলে রাতেই বাসায় ফিরে আসবেন।
আরও পড়ুন- মদনে এজেন্ট ব্যাংকিং অফিসে চুরি
এর আগে বিকেল সাড়ে ৫টায় গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর এভার কেয়ার হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হয়।
বিকেল ৩টার দিকে বেগম খালেদা জিয়ার বাসভবন এলাকায় যান চলাচল সীমিত করে আইনশৃঙ্খলারক্ষা বাহিনী। রাস্তায় দেওয়া হয় ব্যারিকেড।
জানা গেছে, খালেদা জিয়ার সঙ্গে গাড়িতে ছিলেন তার গৃহকর্মী ফাতেমা এবং কয়েকজন আত্মীয়স্বজন ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তা।
এদিকে খালেদা জিয়ার হাসপাতালে নেওয়া খবর পেয়ে ফিরোজায় আসেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম, ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান ডা. জাহিদ হোসেন, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মঞ্জু, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহমেদ প্রমুখ।
আরও পড়ুন- ১৫ দিনের সফরে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী
৭৭ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।
২০২০ সালে তার শর্তসাপেক্ষে মুক্তির পর থেকে বিএনপি চেয়ারপার্সন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি তিনি স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ওই হাসপাতালে যান। ২০২১ সালের এপ্রিলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে খালেদা জিয়া ছয়বার হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। ২০২১ সালের নভেম্বরে খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হন।
গত ১০ জুন তার বাম ধমনীতে ৯৫ শতাংশ ব্লক থাকায় হৃদরোগে আক্রান্ত হন বিএনপি চেয়ারপার্সন এবং পরদিন একই হাসপাতালে ব্লক অপসারণ করে সেখানে স্টেন্ট বসানো হয়।
আরও পড়ুন- রোকাইয়াকে বাঁচাতে প্রয়োজন ৪ লাখ টাকা
ডাক্তাররা তার রক্তনালীতে আরও দুটি ব্লক খুঁজে পেয়েছেন, কিন্তু তার স্বাস্থ্যগত জটিলতার কারণে তারা সেগুলো অপসারণ করতে পারেনি।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি নিম্ন আদালত তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করায় খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। পরে, একই বছর আরেকটি দুর্নীতির মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
খালেদা জিয়া তার গুলশানের বাড়িতে থাকবেন এবং দেশ ছেড়ে যাবেন না এই শর্তে করোনভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে সরকার ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তার সাজা স্থগিত করে একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে সাময়িকভাবে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়।