biggapon ad advertis বিজ্ঞাপন এ্যাড অ্যাডভার্টাইজ XDurbar দূর্বার 1st gif ad biggapon animation বিজ্ঞাপন এ্যানিমেশন biggapon ad advertis বিজ্ঞাপন এ্যাড অ্যাডভার্টাইজ
ঢাকাThursday , 13 April 2023
  1. অন্যান্য
  2. অর্থ ও বাণিজ্য
  3. আইন-বিচার
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আবহাওয়া
  6. কৃষি ও প্রকৃতি
  7. খেলাধুলা
  8. গণমাধ্যম
  9. চাকরি
  10. জাতীয়
  11. ধর্ম
  12. নির্বাচন
  13. প্রবাসের খবর
  14. ফিচার
  15. বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
Xrovertourism rovaar ad বিজ্ঞাপন
আজকের সর্বশেষ সবখবর
  • শেয়ার করুন-

  • Xrovertourism rovaar ad বিজ্ঞাপন
  • আমার বন্ধুর মুখ!

    Link Copied!

    চৈত্র মাসের বিকাল। কয়েকদিন হঠাৎ গরম পড়েছে। টিনের ঘরের যে পাশটায় আমি থাকি, তার চাল বরাবর গাছের ছায়া পরে না। এ ধরণের ঘরে গরমের তেজ কমানোর জন্য বাঁশের তালাইয়ের সিলিং করা হয়; আমার মাথার উপর সেটাও নেই। দুপুরে খাওয়ার পর একটু ঘুমানোর চেষ্টা করলাম। গরমে ঘুম হ’ল না। পাশের বাসার মুনা আন্টির কাছ থেকে ধার করা হুমায়ুন আহমেদের ‘হোটেল গ্রেভার ইন’ পড়লাম কিছুক্ষণ। ভালো লাগল না পড়তে। আজ কেন জানি কিছুতেই মন বসছে না। এখন অপেক্ষা করছি আজিজুলের জন্য।

    আজিজুল আসে শরিষা হতে। এখান হতে ৭ কিলোমিটার দুরের গ্রাম। লোকাল বাসে চড়ে বেড়া সিএনজি-বাসস্ট্যান্ড হয়ে আসতে হয়। তারপর এ বাড়িতে আসতে রিক্সা নিতে হয়। অনেকটা সময় নষ্ট হয়। তারপরও আজিজুল আসে। ও এলে ওকে নিয়ে রেবা আন্টির বাসায় যাই। সেখানে আবু কাকা প্রাইভেট পড়ান। সবশেষের ব্যাচে আমি আর আজিজুল পড়ি। আবু কাকা মঞ্জুর কাদের কলেজের রসায়নের শিক্ষক। দশম শ্রেণির প্রথম সাময়িক পরীক্ষায় রসায়নে খারাপ করার পর আমার প্রস্তাবে রাজি হয়ে দশজন বন্ধু পড়া শুরু করি। একমাস পড়ার পর আটজন আসা বন্ধ করে দিয়েছে।

    চারটার দিকে আজিজুলের আসার কথা। আমি জামা-কাপড় পরে প্রস্তুত হয়ে থাকি। আজ ও আসল একটু আগেই। সবুজ টি শার্ট, নেভি ব্লু প্যান্টে ওকে দারুণ লাগছে। বন্ধুদের মধ্যে ফ্যাশন সচেতন হিসেবে ওর পরিচিতি রয়েছে। আমি ওকে বললাম, তুই রেবা আন্টির বাসায় যা, আমি আসছি। ও চলে গেল।

    কিছুক্ষণের মধ্যে বই-খাতা নিয়ে আমিও বের হলাম। রেবা আন্টিদের বাড়ি যেতে এ গ্রামের ঈদগাহ পার হতে হয়। মাঠ পার হয়ে টং দোকানের সামনে দেখি ছোটখাট জটলা। অলস দুপুরে মাঠের পাশে বাঁশঝাড়ে যারা তাস খেলতে বসেন, তারাও দেখি চিৎকার চেচামেচি করছেন। হন্তোদন্ত হয়ে ছুটে গেলাম। ভিড় ঠেলে দেখি, আজিজুল ধূলোয় লুটিয়ে আছে, পাশে ওর বইয়ের ব্যাগ পরে আছে। আমার আগমনে চিৎকার একটু কমল। সবাই জানে বিপদগ্রস্থ অচেনা এ যুবক আমার বন্ধু। কী হয়েছে, জিজ্ঞেস করলাম। একজন বলল, পাগলা কুকুর কামড় দিয়েছে। আমি হতচকিয়ে গেলাম। কী করব বুঝতে পারছিলাম না। মাঠের এ প্রান্তে পুরনো একটা পুকুর। তার ঘাটে সারাদিন ৬-৭ টা কুকুর আনাগোনা করে। এদেরই একটা হয়তো ওকে কামড় দিয়েছে। আজিজুল দেখি ভয়ে শীটকিয়ে আছে। মজিদ ভাইয়ের কোলে ওর মাথা। টং দোকানদার ওর মাথায় পানি দিচ্ছে। কেউ একজন বলে উঠল, উনাকে হাসপাতালে নিতে হবে, ইনজেকশন দিতে হবে। আমি বললাম, হ্যা, চলেন ওকে হাসপাতালে নিয়ে যাই।

    হাসপাতালে ডাক্তার পাওয়া গেল না। ওকে নেয়া হ’ল সিএনবির এক প্রাইভেট ক্লিনিকে। ডাক্তার ওকে সযতনে দেখলেন। প্রচন্ড ব্যথাদায়ক ইঞ্জেকশন দিলেন। আজিজুলের চিৎকারে আমি ওখান থেকে বের হয়ে এলাম। ওর বাড়িতে খবর দেয়া হ’ল। ওর আত্বীয়-স্বজন আসল। তারা আজিজুলের এই অবস্থা দেখে হাপিত্যেশ করতে লাগলেন। আমি উনাদের কাছে বারবার দুঃখ প্রকাশ করলাম। অভয় দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে গেলাম। ডাক্তারের পরামর্শে উনারা আজিজুলকে সন্ধ্যায় বাড়ি নিয়ে গেলেন।

    আবু কাকার কাছে পড়া বন্ধ হয়ে গেল। আমার বিকালের জগৎ আবার ছোট হয়ে গেল। আজিজুলের সাথে দেখা হয় স্কুলে গিয়ে। প্রায়ই একই বেঞ্চে বসি, বেশিরভাগ দিন পাশাপাশি। হাসি-তামাশায় সময় কাটে। এসএসসি পরীক্ষার পর মিলনমেলা ভাংগল। আমি চলে গেলাম পাবনা শহরে, ও ঢাকায়। দীর্ঘ বিরতিতে আজিজুল দূরের মানুষ হয়ে গেল। মাঝে কয়েক বছরের ব্যবধানে ব্যাচের ঈদ পুণর্মিলনীতে ওর সাথে দেখা হ’ল। ততদিনে ও বিদেশি জাহাজ়ে চাকুরী পেয়েছে। দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়ায়। ওর ব্যাক্তিত্বে দেখলাম পরিপূর্ণতা এসেছে। আমাকে দেখে ওর মুখে যেন কথার ফুলঝুড়ি ঝড়ছিল।

    এরপর আজিজুলের আর দেখা নেই। মাঝে শুনলাম ও বিয়ে করেছে। পাত্রীর নাম শুনে খুশি হলাম ভেবে ও কথা রেখেছে। বীনা সত্যি ভাগ্যবতী মেয়ে। ফুটফুটে ছেলে নিয়ে ওরা সুখে আছে জেনে ভাল লাগল।

    ২০১৬ এর মার্চ মাস। ফেসবুকে ওর ছোট ভাই জানাল, আজিজুল হাসপাতালে ভর্তি। ব্লাড ক্যান্সার ধরা পরেছে। শুনে বুকের ভেতরটা খা খা করে উঠল। মাথা ঘুরতে লাগল। ওর ছোটভাই জানাল, ও আমার সাথে দেখা করতে চায়। আমাদের কথা প্রায়ই বলে। ব্যাচের সবার সাথে কথা বললাম। দেখা করব ঠিক করলাম। আজিজুল সময় দিল না। এপ্রিলে ও চলে গেল।

    এখনও মনে হয় আজিজুল আমাদের সাথেই আছে। খুব বড় একটা দু:স্বপ্ন দেখছি হয়তো। ঘুম ভাংগলেই দেখব আজিজুল এসেছে। এসেই হিন্দি মুভি ‘কাহো না পেয়ার হ্যা’র গল্প জুড়ে দিবে; অথবা গতরাতে দেখা ওয়াসিম আকরামের বিধ্বংশী প্রতিটা বলের নিখুত বর্ণনা দিবে। রোনাল্ডো নাকি বাতিস্তুতা সেরা- এই বিতর্কে সবাইকে নাজেহাল করবে। একদিন হয়তো পাটের চেলে পোকার বৈজ্ঞানিক নাম শুনে আজিজুল হেসে উঠবে। গগন-বিদারী সে হাসি পূর্নিমা রাতে চরাচর ছড়িয়ে পরবে।

    লেখক: মো. ইমরান হোসেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সদর-লক্ষ্মীপুর।

    Share this...

    বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বে-আইনি।
    ঢাকা অফিসঃ ১৬৭/১২ টয়েনবি সার্কুলার রোড, মতিঝিল ঢাকা- ১০০০ আঞ্চলিক অফিস : উত্তর তেমুহনী সদর, লক্ষ্মীপুর ৩৭০০