সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টার পরে তাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে তাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।
সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হয়েছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা, স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মরদেহ। দুপুর সাড়ে ১২টায় রাষ্ট্রীয়ভাবে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়েছে।
ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে গার্ড অব অনার দেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) হেদায়েতুল ইসলাম।
আরও পড়ুন- রোকাইয়াকে বাঁচাতে প্রয়োজন ৪ লাখ টাকা
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়ার পর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এ কে আজাদ চৌধুরী, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের নেতা, রাশেদ খান মেননের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল, পরিকল্পনামন্ত্রী আব্দুল মান্নান, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে একটি দল, ঢাকা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক, নাট্যকর্মী, বিভিন্ন রাজনীতিবিদ, সাংবাদিকসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ।
দুপুর ২টায় তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। সেখানে দুপুর আড়াইটায় প্রথমবারের মতো তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজার পর তার দাফন বিষয়ে পরিবারের সদস্যদের সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
জানাজা শেষে তার মরদেহ আবারও বারডেমেরে হিমঘরে রাখা হবে।
আগামীকাল শুক্রবার সকাল ১০ টা থেকে ডা. জাফরুল্লাহর মরদেহ সাভারের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে রাখা হবে। সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বাদ জুমআ তার দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
গত মঙ্গলবার রাত ১১টায় রাজধানীর ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ইন্তেকাল করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। তিনি দীর্ঘদিন কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বহুবছর ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। সম্প্রতি তার বার্ধক্যজনিত জটিলতাগুলো খারাপের দিকে যায়। এর মধ্যে সোমবার তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। মঙ্গলবার রাতে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন- শহীদ মিনারে ডা. জাফরুল্লাহকে শ্রদ্ধা জানানো হবে, দুপুরে জনাজা
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জন্ম ১৯৪১ সালের ২৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার কোয়েপাড়া গ্রামে। তার বাবা হুমায়ন মোর্শেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা আর মা হাছিনা বেগম চৌধুরী ছিলেন গৃহিনী। মা–বাবার ১০ সন্তানের মধ্যে জাফরুল্লাহ চৌধুরী ছিলেন সবার বড়। ১৯৭১ সালে জাফরুল্লাহ চৌধুরী যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরে ভারতের আগরতলায় গেরিলা প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। তিনি বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে তা পরিচালনা করেন।
মুক্তিযুদ্ধের পর সেই হাসপাতালের নামেই একটি প্রতিষ্ঠান গড়তে চেয়েছিলেন। পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে আলোচনা করে নাম ঠিক করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।
হাসপাতালের পাশাপাশি ওষুধ উৎপাদনকারী কোম্পানিও গড়েছেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। ১৯৮২ সালে দেশে প্রথমবারের মতো ঔষধ নীতি প্রণয়নেও তার ভূমিকা ছিল।