সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সরকারের স্থায়িত্ব দিয়েছে বলে জানিয়েছেন সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেছেন, ইচ্ছামতো সরকার ভাঙা-গড়া করতে পারছেন না বলেই অনেকেই ৭০ অনুচ্ছেদ পরিবর্তনের কথা বলছেন।
সোমবার (১০ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১৪৭ বিধিতে উত্থাপিত প্রস্তাবের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
এর আগে বেলা ১১টা ৩৩ মিনিটে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশন শুরু হয়। এটি একাদশ জাতীয় সংসদের ২২তম অধিবেশন। পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অধিবেশন শুরু হয়।
আরও পড়ুন- রোকাইয়াকে বাঁচাতে প্রয়োজন ৪ লাখ টাকা
এ অধিবেশনে সরকারের শরীক ওয়ার্কার্স পর্টি ও জাসদ এবং বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের কারণে সংসদ সদস্য স্বাধীনভাবে মতামত দিতে পারছে না বলে মন্তব্য করেন। তারা সংবিধানের ওই অনুচ্ছেদ পরিবর্তনের দাবি জানান। সর্বশেষ বিরোধী দলের উপনেতা জিএম কাদেরও একই দাবি জানান।
সংসদ নেতা বলেন, ‘অনুচ্ছেদ ৭০ গণতন্ত্রকে সুরক্ষা দেয় ও জনগণের কাছে গণতন্ত্রের সুফল পৌঁছে দেয়ার জন্য এটিকে আরও শক্তিশালী করে। কিন্তু, আমাদের (সংসদ) সদস্যদের মধ্যে কয়েকজন এই অনুচ্ছেদের বিরুদ্ধে। কারণ, এই অনুচ্ছেদের জন্য তারা ইচ্ছেমতো সরকার ভাঙা-গড়ার খেলা খেলতে পারছেন না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রধানত সংসদ সদস্যদের ফ্লোর ক্রসিংয়ের কারণে ১৯৪৬ এবং ১৯৫৪ সালের নির্বাচনের পর গঠিত সরকারগুলোকে উৎখাত করার কথা উল্লেখ করে, তাদের অনভিজ্ঞতার কারণে কয়েকজন সংসদ সদস্য সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।
আরও পড়ুন- মাটি জমে ভরাট হচ্ছে মেঘনা নদী লক্ষ্মীপুর অঞ্চল
তিনি আরো বলেন, ‘সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ নিয়ে অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। যারা এটা করছেন তাদের অভিজ্ঞতার অভাব থাকতে পারে। ৭০ অনুচ্ছেদ আমাদের দেশে সরকারকে স্থিতিশীলতার সুযোগ দিয়েছে-যে কারণে দেশ উন্নয়নের সাক্ষী হয়েছে।’
বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের তার বক্তৃতায় সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের কথা বলেন।
এর আগে সংসদের কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ ধারায় প্রধানমন্ত্রীর ৭ এপ্রিল গৃহীত একটি রেজুলেশনের ভিত্তিতে সংসদে বিশেষ আলোচনা হয়। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সংসদে দেশের অর্জন তুলে ধরে স্মারক ভাষণ দেন।
সংসদে আরও বক্তব্য দেন বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের।
জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্তি তথা সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে গত ৬ এপ্রিল বিশেষ এই অধিবেশন শুরু হয়। রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ সংবিধানের ৭২ অনুচ্ছেদের (১) দফায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে গত ২১ মার্চ এ অধিবেশন আহ্বান করেন।