বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শর্তযুক্ত মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন আইন মন্ত্রণালয়ে এসেছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তবে মন্ত্রীর কাছে এখনো ফাইলটি পৌঁছায়নি বলেও জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) ইউরোপের ইউনিয়নভুক্ত সাত দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আইনমন্ত্রী। তখন তিনি এসব তথ্য জানান।
আইনমন্ত্রী আরও বলেন, ‘তার (খালেদা জিয়ার) পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়। আমি যেটা মনে করি, আগে যে শর্ত ছিল সেটিই থাকবে। তার বিদেশে চিকিৎসার জন্য কোনো আবেদন আসেনি।’
আরও পড়ুন- রোকাইয়াকে বাঁচাতে প্রয়োজন ৪ লাখ টাকা
তিনি বলেন, তার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়টি আগের শর্তে নেই। তাকে বিদেশে চিকিৎসার আবেদন নাকচ করা হয়েছে বলে যে সংবাদ এসেছে, তা সত্যি নয়। এমন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
এর আগে, রোববার (৫ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সরকারি মামলা ট্র্যাকিং সিস্টেম সলট্র্যাক সফটওয়্যারের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেছিলেন, খালেদা জিয়ার সাময়িক মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন এখনও পাননি।
এর আগে, খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেন তার পরিবারের সদস্যরা। এবারের আবেদনেও তার মুক্তির শর্ত শিথিল করে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়ার অনুমতি চাওয়া হয়।
খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার সোমবার (৬ মার্চ) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ আবেদন করেন। খালেদা জিয়ার পরিবারের এক সদস্য ৭ মার্চ বিষয়ট নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন- ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রোহিঙ্গা ইস্যু চাপা পড়েছেঃ আল জাজিরাকে প্রধানমন্ত্রী
এরপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সাংবাদিকদের জানান, আবেদনটি তিনি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন। আইন মন্ত্রণালয় মতামত দেয়ার পর আবেদনের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন, যা আজ আইন মন্ত্রণালয় জানালো।
গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ (ষষ্ঠ দফা) ছয় মাস বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। চলতি মাসের ২৪ মার্চ শেষ হচ্ছে তার মুক্তির মেয়াদকাল।
এর আগে, ২০২২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বরে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ষষ্ঠ দফা তা বাড়ানোর আবেদন করেছিল খালেদা জিয়ার পরিবার।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজা হলে কারাজীবন শুরু হয় খালেদা জিয়ার। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও তার সাজার রায় হয়। সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাবরণের পর সরকারের নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়া প্রায় চার বছর ধরে গুলশানে নিজ বাসা ‘ফিরোজায়’ রয়েছেন। সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী ডায়াবেটিস, চোখের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছেন।