প্রতারণা ও জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে আমমোক্তার নামা দলিল থেকে হেবা দলিল সৃজন করতঃ সরকারি খাস জমি আত্মসাতের হীন উদ্দেশ্যে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে মিথ্যা ও বিরক্তিকর মামলা দায়ের করে ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত হয়েছেন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চররুহিতা গ্রামের আবুল কালামের স্ত্রী পারভিন আক্তার।
আজ (২২ জানুয়ারি, (রবিবার) লক্ষ্মীপুর ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারক মুহাম্মদ মুনির হোসাঈন জনাকীর্ণ আদালতে চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে মামলার বাদীর মোকদ্দমা ২০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণমুলক খরচাসহ (জরিমানা) খারিজ করা হয় এবং বাদীর তঞ্চকতার মাধ্যমে সৃজিত হেবা দলিলটি জব্দ করে বাজেয়াপ্তের আদেশসহ এলএসটি ১১১৩/১৪ নম্বর মামলাটি খারিজ করা হয়।
এ রায়ের সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে লক্ষ্মীপুরের আদালতপাড়াসহ সর্বত্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। লক্ষ্মীপুর ল্যান্ডসার্ভে ট্রাইব্যুনাল ঘটিত হবার পর এ ধরনের রায় এটাই প্রথম বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
লক্ষ্মীপুর ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌশলী (জিপি) শ্যামল কান্তি চক্রবর্তী রায়ের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন।
জানা যায়, বাদী পারভিন আক্তার লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ৪৭নং মজানদী মৌজার আরএস ১নং খাস খতিয়ানের ১১৪৫ দাগের ২৭ শতক ভূমির অন্দরে ৯ শতক ভূমির মালিকানা দাবি করে লক্ষ্মীপুর ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে ১১১৩/২০১৪নং মামলাটি দায়ের করেন। উক্ত মামলার তফসিলভূক্ত সম্পত্তি সিএস ১৩৭নং খতিয়ানের মালিক ছিলেন পিতাম্ভর মালি। পরিবর্তীতে পিতাম্ভর মালির পুত্র সুভাস চন্দ্র মালি মামলার তফসিলে বর্ণিত ভূমির মালিক নিযুক্ত হন। উক্ত সুভাস চন্দ্র মালি বিগত ০৩/১০/২০১০ইং তারিখে ৫০৮৬নং আমমোক্তার নামা দলিল মুলে বাদীর স্বামী আবুল কালামকে কার্যকারক নিযুক্ত করেন। কিন্তু বাদীর স্বামী আবুল কালাম উক্ত সুভাস চন্দ্র মালির আমমোক্তার নিযুক্ত হওয়ার বিষয়টি গোপন করে চন্দ্রগঞ্জ সাবরেজিষ্ট্রী অফিসের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে তার স্ত্রী পারভিন আক্তার বরাবরে ৪/৫/২০১০ইং তারিখে প্রতারণা ও ক্ষমতা বহির্ভূতভাবে ২১৯৭নং হেবা দলিল সৃজন করেন। সুভাস চন্দ্র মালি বিগত ০২/০৮/২০১০ইং তারিখে উক্ত আমমোক্তারনামা প্রত্যাহার করার পরও উক্ত হেবা দলিল উপস্থাপন করে বাদী পারভিন আক্তার সরকারি খাস জমি অন্যায়ভাবে আত্মসাত করার হীন উদ্দেশ্যে উক্ত মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। বাদীর প্রতারণার বিষয়টি আদালতে সাক্ষ্য দ্বারা প্রমাণিত হলে মামলার বাদী পারভিন আক্তারকে সিপিসি এ্যাক্ট এর ৩৫/এ ধারার বিধান মোতাবেক ২০ হাজার টাকা খরচা (জরিমানা) ৬০ দিনের মধ্যে মধ্যে সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার আদেশ দেন এবং এলএসটি ১১১৩/২০১৪নং মামলাটি খারিজ করা হয়। একই সাথে বাদীর নামীয় ২১৯৭নং তঞ্চকতাপূর্ণ হেবা দলিলটি জব্দ ও বাজেয়াপ্তক্রমে ধ্বংস করার নির্দেশ দেয়া হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌশলী (জিপি) শ্যামল কান্তি চক্রবর্তী ও বাদীনির পক্ষে ছিলেন এডভোকেট জাফর আহাম্মদ।