লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দালাল বাজার সরকারি বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে টাকার বিনিময়ে শ্রেণী কক্ষে উত্তীর্ণ করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক রেহানা আবেদা মঞ্জুর বিরুদ্ধে। শিক্ষার্থীরা রীতিমতো ক্লাস ও পরীক্ষা না দিয়ে টাকা বিনিময়ে লাফিয়ে উঠে ওপরের ক্লাসে। এনিয়ে সচেতন অভিভাবক ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভেতরে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
মো. রাজু নামে এক দিনমজুর জানান, তার ছেলে অসুস্থতার কারণে চতুর্থ শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি। জানুয়ারির ২ তারিখে বিদ্যালয় গিয়ে তার ছেলেকে পঁঞ্চম শ্রেণীতে উঠানোর জন্য শিক্ষকদের কাছে অনুরোধ করা হয়। তখন মঞ্জু ম্যাডাম দাবি করছে ১২’শ টাকা লাগবে। টাকা না দিলে আপনার ছেলে চতুর্থ শ্রেণীতে থাকুক। তখন আমি মঞ্জু ম্যাডামকে বলি, আমি একজন শ্রমিক এতো টাকা কই থেকে দিমু। আর আমার ছেলের সহপাঠীরা চতুর্থ শ্রেণী থেকে পঁঞ্চম শ্রেণীতে উঠছে। তার এখন মন খারাপ। আর সে-তো ছাত্র হিসাবে ভালো। অসুস্থ না হলেতো সেই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতো,পাশ ও করতো।
জাহানারা বেগম নামে এক নারী অভিভাবক জানান, তার মেয়ে তৃতীয় শ্রেণীতে ৩ বিষয় খারাপ করছে। শিক্ষকরা ৬’শ টাকা দাবি করছে, যদি তাকে চতুর্থ শ্রেণীতে উঠাতে চায়। পরে আমরা ৩’শ ৫০টাকা দিয়ে তাকে (আমার) মেয়েকে চতুর্থ শ্রেণীতে উঠানো হয়। টাকা ছাড়া এ স্কুলের স্যাররা কিছুই বুঝে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অভিভাবক বিদ্যালয়টি গিয়ে শিক্ষকদের কাছে অতিরিক্ত টাকার বিনিময়ে পাস না ছাত্রকে কিভাবে আপনার ওপরে শ্রেণীতে তুলছেন? শিক্ষার্থীরা পঞ্চম শ্রেণীতে পাস করছে তাদের সার্টিফিকেট নিতে চাইলে আপনারা ৫’শ টাকা দাবি করছেন। কি কারণে? উত্তরে অভিযুক্ত মঞ্জু শিক্ষক বলেন, কেউ ৪’শ কেউবা আবার ১হাজার টাকা দেয়। এসবের তো কোনো সমস্যা নাই।
অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে (আজ) বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুর ১২টা ৪২মিনিটে মুঠোফোনে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক রেহানা আক্তার মঞ্জুর কাছ থেকে জানতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন, একপর্যায়ে রেগে উঠে বলেন আপনি কিসের সাংবাদিক বলেই মোবাইল ফোন বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. দেলোয়ার হোসেন মজুমদার মুঠোফোনে জানান, শিক্ষার্থী অথবা তাদের অভিভাবকদের কাছ থেকে কোনভাবেই টাকা নেওয়া যাবে না। যে প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে, বিষয়টি আমরা তদন্ত করে সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।