শীর্ষ সংবাদে খবর প্রকাশের পর অবশেষে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে সরকারি হাসপাতালের দুই সিনিয়র নার্সকে তাদের দায়িত্ব থেকে (ওটির ইনচার্জ ও সুপার) অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
সোমবার (৯ জানুয়ারী) বিষয়টি নিশ্চিত করেন স্বাস্থ কর্মকর্তা ডাঃ বাহারুল আলম। উল্লেখ্য- রোববার শীর্ষ সংবাদে খবর প্রকাশিত হয়। এতেই তোলপাড় শুরু হয়।
অভিযুক্ত দুই নার্স হলেন সুপার আরজু বেগম ও ওটির ইনচার্জ ইয়াসমিন আক্তার। এদিকে- তাদের পরিবর্তে নার্স আফরোজা, নাইমুন নাহার ও নাজমাকে ওটিসহ অন্যান্ন দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এছাড়াও নার্স আরজুর বিরুদ্ধে তিন মাস আগে অসুস্থ্য রোগীকে মেয়াদোর্ত্তীন্ন স্যালাইন পুশ করা ও রোগীদের সাথে চরম দুর্ব্যবহার করে থাকেন।।
শনিবার (০৭ জানুয়ারী) সন্ধায় সরকারি হাসপাতালের-জরুরি বিভাগের বাহিয়ে (টিউবওয়েলের সামনে) কনকনে শীতের মধ্যে পুত্র সন্তান প্রসব করেছেন এক গৃহবধূ। আমেনা বেগম বেগম (৩৬) নামে ওই গৃহবধূ উপজেলার চরবংশী ইউপির চরকাছিয়া গ্রাম দিনমজুর লাল মিয়ার স্ত্রী।
এই ঘটনা জানাজানি হলে চার ঘন্টার মধ্যেই হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার বাহারল আলম জরুরী ভিত্তিতে গৃহবধুর বোন, গৃহকর্তা প্রভাষক নুরনবি ও সাংবাদিকের উপস্থিতিতে ওই নার্সকে এঘটনার জন্য বৎসনা করেন। দ্রুত অসুস্থ্য আমেনা বেগম ও তার অসুস্থ্য শিশুকে হাসপাতালে এনে ভর্তিকরে শিশু ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা করান।
বর্তমানে গত দুই দিন আমেনা বেগম রায়পুর সরকারি হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন। আমেনা বেগম ও তার শিশু সন্তান সুস্থ রয়েছে বলে জানান গাইনি ওয়ার্ডের নার্সরা।
আমেনার বড় বোন ফিরোজা বেগম জানান, অসুস্থ্য আমেনাকে দুপুর ২টার সময় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এসে ডাক্তার দেখার পর ভর্তি করেন। নার্স আরজু বেসরকারি দুটি হাসপাতালে আলট্র পরীক্ষা করান। বাচ্চার ওজন কম ও পানিও কম এবং আইসিইউ নাই এই বলে বিকালে জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরন করে। কিন্তু আমরা গরিব মানুষ ও অন্যের বাসায় কাজ করে সংসার চলে। টাকার কারনে অন্য হাসপাতালে না গিয়ে এই হাসপাতালে রেখেই চিকিৎসার করার জন্য কয়েকবার না্রসকে অনুরোধ করি। কিন্তু নার্স আমাদের কথা না শুনেই অন্য হাসপাতালে পাঠান।
সন্ধায় কান্নাকাটি করে অসুস্থ্য আমেনাকে নিয়ে সদর হাসপাতালে রওয়ানা দিলে হাসপাতালের সামনে টিউবওয়েলের কাছে আসার পর প্রসব বেদনা উঠে। এ সময় সেখানেই তিনি সন্তান জন্ম দেয়। বর্তমানে প্রসূতি ও নবজাতক সুস্থ রয়েছে।
চিকিৎসাধীন গৃহবধূ আমেনা জানান, এটি তার প্রথম সন্তান। জরুরি বিভাগে ভর্তির সময় প্রসব ব্যথা উঠে। নার্স বলাতেই অন্য হাসপাতালে যাওয়ার পথে টিউবওয়েলের সামনে সন্তানের জন্ম হয়। তখন দুইজন মহিলা এসে সহায়তা করেছেন।
রায়পুর স্বাস্থ্য ও পরিবার পটিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার বাহারুল আলম বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক । আগামিতে এধরন এর ঘটনা যেন না হয়, দুই নার্স আরজু ও ইয়াসমিনকে ওটির দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সবাইকে সতর্ক করা হয়।