সড়ক আইন সংশোধন ও অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধসহ ১১ দফা দাবিতে সমগ্র রাজশাহী বিভাগে চলছে পরিবহন ধর্মঘট। চলমান এই বাস ধর্মঘটের মধ্যে এবার সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও থ্রি হুইলার ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে।
আজ শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা মিশুক-সিএনজি মালিক সমিতি এই ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছে।
এদিকে বাস মালিকদের ডাকা ধর্মঘট শুরুর পর রাজশাহী থেকে দূরপাল্লা বা আন্তঃজেলা রুটের কোনো বাস ছেড়ে যায় নি।
রাজশাহীর সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে রাজধানী ঢাকাসহ পুরো দেশের সড়ক পথের যোগাযোগ ব্যবস্থা। ধর্মঘটের প্রভাবে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে পুরো রাজশাহী বিভাগ। এতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শ্রমজীবি, দিনমজুর কিংবা সাধারণ মানুষকেও। জরুরী কাজে গন্তব্যে যাওয়ার একমাত্র ভরসা হয়েছে ট্রেন। এছাড়া অটো বা বিকল্প পরিবহনে যেতে কয়েকগুণ অতিরিক্ত অর্থ গুণতে হচ্ছে যাত্রীদের।
আগামীকাল শনিবার (৩ ডিসেম্বর) রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই সমাবেশের আগে ১০ দফা দাবিতে বৃহস্পতিবার থেকে রাজশাহী বিভাগে অনির্দিষ্টকালের বাস ধর্মঘট ডেকেছে পরিবহন মালিক সমিতি। চলমান এই বাস ধর্মঘটের মধ্যে এবার অটোরিকশা ও থ্রি হুইলার ধর্মঘটও ডাকা হলো।
আরও পড়ুন- প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের ফল ১৪ ডিসেম্বর
মিশুক-সিএনজি মালিক সমিতির সহসভাপতি আহসান হাবিব বলেন, তাদের গাড়ির লাইসেন্স আছে। কিন্তু বাস মালিকেরা তাদের গাড়িকে ‘অবৈধ’ বলেন। মহাসড়কে তাদের গাড়ি চলাচলে বাস মালিকেরা বাধা দেন। তাই তারা দুই দফা দাবিতে ধর্মঘট শুরু করেছেন। দাবি দুটি হলো-বাস মালিকদের বাধা এবং বিআরটিএর হয়রানি বন্ধ করা।
বিএনপির সমাবেশের জন্যই এই ধর্মঘট ডাকা হলো কি না জানতে চাইলে আহসান হাবিব বলেন, ‘একেবারেই সত্য না। বাস মালিকেরা আমাদের ওপর অত্যাচার করছে। আমাদের চলতে দিচ্ছে না রাস্তায়। বাধ্য হয়ে এ সিদ্ধান্ত। দুপুর থেকে ধর্মঘট পুরোপুরি কার্যকর হয়েছে। আলোচনা হবে, সমাধান হবে, তারপর ধর্মঘট প্রত্যাহার হবে। তার আগে না।’
এদিকে শনিবার বিএনপির সমাবেশ হবে ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠে (হাজী মুহম্মদ মুহসীন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ)। এখন সেখানে মঞ্চ এবং মাঠ প্রস্তুতের কাজ চলছে। এ মাঠে এখন অন্য নেতা কর্মীদের প্রবেশের সুযোগ নেই। তাই বুধবার রাত থেকেই দূরদূরান্ত থেকে আসা নেতা কর্মীরা পাশের ঈদগাহ মাঠে অবস্থান করছেন। বিরাট ঈদগাহের প্রায় পুরোটাই তাঁবুতে তাঁবুতে ভরে গেছে। এখনো স্লোগানে স্লোগানে মিছিল নিয়ে একটার পর একটা দল ঢুকছে।
তবে বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, শনিবারের গণসমাবেশে বাধা দিতেই এ পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। তবে বিকল্প পরিবহনে বিভিন্ন জেলা থেকে নেতাকর্মীরা এলেও পথে পথে গাড়িতে তল্লাশি করছে পুলিশ। রাস্তায় গাড়ি আটকে রাজশাহী প্রবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে, ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে রাজশাহী বিভাগীয় গণসমাবেশের সমন্বয়ক ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু বলেন, আগামী ৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় গণসমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতেই এ পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। তবে সমাবেশ বাধা দিয়ে বন্ধ করতে পারবে না, রাজশাহী বিভাগের আট জেলা থেকেই তাদের নেতাকর্মীরা বিকল্প পরিবহনে রাজশাহী আসছেন।