শুকনো মৌসুমে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর পশ্চিমাঞ্চল মেঘনা উপকূলীয় ঐতিহ্যবাহী হায়দরগন্জে অগ্নি দুর্ঘটনায় সর্বশান্ত হচ্ছে মানুষ। এখনো এ গুরুত্বপুর্ণ অঞ্চলে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন না থাকায় অগ্নি দুর্ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে।
উপজেলার মেঘনা উপকূলীয় অঞ্চলের গুরুত্বপুর্ণ তিনটি ইউপির হায়দরগন্জ বাজার (গুরুত্বপুর্ণ অঞ্চল)। এ অঞ্চলে সয়াবিন, ধান, আলুসহ কৃষি সমৃদ্ধ ও সেরা কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হওয়ায় পাঁচ উপজেলার মানুষ বেশি যাতায়াত করেন।
জেলার ফায়ার সার্ভিস অফিসের তথ্যানুযায়ী ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত হায়দরগন্জে ২০টি অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে ক্ষতি হয় তিন কোটি টাকার।
রায়পুরের চরবাবিল গ্রামের ৭০ বছর বয়স্ক বৃদ্ধ রুহুল আমিন। ’স্ত্রী, দুই দিনমজুর ছেলে জামাল হোসেন ও মাহবুব সহ পুত্রবধূ ও ৬ নাতি ও নাতনীকে নিয়ে পৃথক তিনটি টিনের ঘরে কোনো রকমে জীবনযাপন করতেন তারা। কিন্তু গত শনিবার রাতে অগ্নি দুর্ঘটনায় তিন পরিবারের ঘরগুলোসহ আগুনে সব ভস্মীভূত হয়ে যায়। এতে তাদের ১৪ লাখ টাকার মালামাল ক্ষতি হয়েছে।
১২ কিলোমিটার দূরের ফায়ার সার্ভিস আসার আগেই দুই থেকে আড়াই ঘণ্টায় আগুন থেমেছে তখন আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। তারপরও আগুনে পুড়ে যাওয়া সামগ্রীর মধ্যে আধাপোড়া জিনিসপত্র তল্লাশি করে ব্যাবহারযোগ্য কোনো জিনিসপত্র পাওয়া যায় কিনা তা খুঁজে ফিরছেন বৃদ্ধ রুহুল আমিন। সেই সঙ্গে বিলাপ করছেন সব হারানোর।
শুধু রুহুল আমিনই নয়, এমন চিত্র উপজেলার মেঘনা উপকূলীয় চারটি ইউপির ( গুরুত্বপু্র্ণ হায়দরগন্জ বাজর) আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় প্রতিটি পরিবারের। তবে নিকটবর্তী স্থানে ফায়ার সার্ভিস থাকলে এমন ক্ষতি হতো না বলে দাবি স্থানীয়দের। তারা মনে করেন, জনসাধারণের জানমাল রক্ষায় অন্তত হায়দরগন্জ বাজার বানিজ্যকেন্দ্র এলাকায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপন করা প্রয়োজন।
রায়পুর ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশান মাষ্টার আবদুল ওহাব মিয়া জানান, ২০১৮ সালের জুলাই মাসে রায়পুর-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে এলএম পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে উপজেলা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন হয়। এর মাধ্যমেই প্রথম শ্রেণীর পৌরসভাসহ ১০টি ইউনিয়নে অগ্নি দুর্ঘটনা সামাল দেওয়া হচ্ছে। শুকনো মৌসুমে অগ্নি দুর্ঘটনা বেশি ঘটে। এ জন্য সবাইকে সচেতন থাকা প্রয়োজন। সে লক্ষে ঘরে পানি ও বালি সংরক্ষণ করার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।
