আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) যশোরের শামস্-উল হুদা স্টেডিয়ামে বিশাল জনসভায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বার্তা দেবেন। ১০ লাখ লোক সমাগমের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে এই জনসভায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনকে কেন্দ্র করে উৎসাহ-উদ্দীপনা এখন পুরো যশোরজুড়ে।
বুধবার (২৩ নভেম্বর) জনসভাস্থল পরিদর্শন করে এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। এ সময় যশোর- ৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, জনসভার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। যশোরসহ আশপাশের এলাকার কোনও মানুষ ঘরে থাকবে না, তারা বৃহত্তর যশোরের উন্নয়নে রূপকার বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার কথা শুনতে আসবে।
যশোরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসার খবরে এই এলাকার মানুষের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে জানিয়ে নানক বলেন, আগামীকাল স্টেডিয়াম ছাড়িয়ে পুরো শহর জনসভাস্থলে পরিণত হবে। জনসভায় ১০ লাখ লোকের সমাগম হবে। এই জনসভা থেকে বিএনপি-জামায়াত অপশক্তিকে আমরা জানিয়ে দিতে চাই- এই বাংলাদেশ হলো মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তির বাংলাদেশ। সেই গর্জন যশোর থেকে শুরু হবে।
আরও পড়ুন- লক্ষ্মীপুরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করলো প্রশাসন
তিনি বলেন, এখানকার প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে আমরা গিয়েছি, সেখানকার মানুষ জানে— ১৪ বছর আগে যশোর ছিল একটি ক্ষতবিক্ষত জনপদ। সেই যশোরসহ আশপাশের জেলাগুলাতে এখন উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। এই এলাকার মানুষ সবসময় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করেছে।
বিএনপির সমাবেশের সঙ্গে আওয়ামী লীগের এই জনসভার কোনও প্রতিযোগিতা আছে কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করবো, যারা ভাইয়ের সামনে বোনকে রেপ করেছে, গাড়ির মধ্যে যারা মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে, যারা দেশকে জঙ্গিবাদের অভয়ারণ্যে পরিণত করেছিল? যারা উন্নয়নের একটি দৃষ্টান্ত দিতে পারবে না, তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা বা তুলনা করার কোনও সুযোগ আমাদের নেই।
নিরাপত্তার বিষয়ে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, জঙ্গিরা তৎপর রয়েছে, তাদের ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এসব বিষয় মাথায় রেখে নিশ্চয়ই আমরা সর্বপ্রথম গুরুত্ব দিবো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তার বিষয়টি, তারপর গুরুত্ব পাবে জনসমাগমের বিষয়টি। এ জন্য আমরা গণমাধ্যমের সহযোগিতা চাই।
খুলনা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, খুলনা বিভাগীয় আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা জনসভায় যোগদানের সকল প্রস্তুত সম্পন্ন করেছেন। আগামীকাল বৃহস্পতিবারের জনসভা জনসমুদ্রে পরিণত হবে। জনসভাকে ঘিরে এই এলাকার মানুষের মাঝে উৎসবের আমেজ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
তিনি বলেন, জনসভায় দেশের রাজনৈতিক এবং আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখবেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে দেশের মানুষকে আগামীতে কীভাবে পরিচালনা করবেন, দেশকে কীভাবে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবেন এবং এই বিষয়ে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখবেন তিনি।
এই জনসভা থেকে দেশবাসীর কাছে একটি বার্তা যাবে উল্লেখ করে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, দেশের রাজনীতিতে যারা দুষ্টচক্র, সাম্প্রদায়িক শক্তি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, যারা রাজনীতি ও গণতন্ত্রকে ক্ষতবিক্ষত করতে তৎপর এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য যারা ষড়যন্ত্রের রাজনীতি করছেন, তাদের বিরুদ্ধে সারা দেশের মানুষে কাছে একটি বার্তা যাবে। সেটা হলো—দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের পক্ষে, শেখ হাসিনার পক্ষে এবং নৌকার পক্ষে। তারা সন্ত্রাসের বিপক্ষে, সাম্প্রদায়িক শক্তির বিপক্ষে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন— আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, এসএম কামাল হোসেন, বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময়, যশোর জেলা আওয়ামী লগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার, যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, যশোর-২ আসনের সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) নাসির উদ্দিন, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ প্রমুখ।