biggapon ad advertis বিজ্ঞাপন এ্যাড অ্যাডভার্টাইজ XDurbar দূর্বার 1st gif ad biggapon animation বিজ্ঞাপন এ্যানিমেশন biggapon ad advertis বিজ্ঞাপন এ্যাড অ্যাডভার্টাইজ
ঢাকাFriday , 19 August 2022
  1. অন্যান্য
  2. অর্থ ও বাণিজ্য
  3. আইন-বিচার
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আবহাওয়া
  6. কৃষি ও প্রকৃতি
  7. খেলাধুলা
  8. গণমাধ্যম
  9. চাকরি
  10. জাতীয়
  11. ধর্ম
  12. নির্বাচন
  13. প্রবাসের খবর
  14. ফিচার
  15. বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
Xrovertourism rovaar ad বিজ্ঞাপন
আজকের সর্বশেষ সবখবর
  • শেয়ার করুন-

  • Xrovertourism rovaar ad বিজ্ঞাপন
  • বিলকিস বানু ধর্ষণের মামলা আবার কেন শিরোনামে?

    Link Copied!

    সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হওয়ার পাশাপাশি নিজের পরিবারের ১৪ সদস্যকে খুন হতে দেখেছিলেন বিলকিস বানু। ২০০২ সালে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটে মুসলিম বিরোধী দাঙ্গায় সংঘবদ্ধ হিন্দু গ্রুপের হামলার শিকার হয়েছিলেন তারা। আবারও খবরের শিরোনামে ফিরেছেন সেই বিলকিস বানু।

    ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করা ১১ আসামি গত সোমবার কারাগার থেকে বীরোচিত সম্মান পেয়েছে। ভাইরাল হয়ে যাওয়া এক ভিডিওতে দেখা গেছে, গোধরা কারাগারের বাইরে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ানো এসব আসামিকে মিষ্টি খাওয়াচ্ছেন স্বজনেরা। আর অনেকেই সম্মান জানাতে তাদের পাঁ ছুয়ে প্রণাম করছেন।

    গত সোমবার ভারতের ৭৫তম স্বাধীনতা দিবসে গুজরাট সরকার এসব আসামিকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন বিরোধী দল, অ্যাক্টিভিস্ট এবং বেশ কয়েকজন সাংবাদিক। তারা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত সংখ্যালঘু মুসলিমদের অধিকারের বিরুদ্ধে গেছে। ২০১৪ সালে বিজেপি কেন্দ্রীয় সরকার গঠনের পর থেকে মুসলিমদের ওপর আক্রমণের ঘটনা দ্রুত বেড়েছে।

    ঊর্ধ্বতন এক সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আসামিরা ১৪ বছর কারাগারে কাটিয়ে ফেলার পর দণ্ডিতদের মুক্তির আবেদন অনুমোদন করেছে সরকারের একটি প্যানেল। এছাড়া আসামিদের বয়স, কারাগারে তাদের আচরণ এসব ফ্যাক্টরও বিবেচনায় রাখা হয়েছে। দণ্ডিত এসব পুরুষদের প্রথম বিচারিক আদালতে দণ্ড হয় ২০০৮ সালে। ইতোমধ্যেই তারা কারাগারে ১৫ বছর কাটিয়ে ফেলেছে।

    বিলকিস বানু ধর্ষণের মামলা আবার কেন শিরোনামে?

    স্বামী-সন্তানের সঙ্গে বিলকিস বানু। ছবি: বিবিসি

    তবে অনেকেই মনে করেন, এই সিদ্ধান্ত কেন্দ্র ও গুজরাটের রাজ্য সরকারের এক নির্দেশনার বিরুদ্ধে গেছে। উভয় নির্দেশনাতেই বলা আছে ধর্ষণ ও হত্যায় দণ্ডিতদের কোনওভাবেই দণ্ড কমানোর বিবেচনায় নেওয়া যাবে না। ভারতে সাধারণত এসব অপরাধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হলে আমৃত্যু তা ভোগ করতে হয়।

    অনুমান করা যায় এই ঘটনা বিলকিস বানু এবং তার পরিবারের জন্য সবচেয়ে বড় ধাক্কা। তার স্বামী ইয়াকুব রসুল ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, ‘সোমবার সন্ধ্যায় বেশ কয়েক মিনিট ধরে বিলকিস বানু বিশ্বাস করতে পারছিলেন না আসামিরা মুক্ত হয়ে ঘুরে বেড়াবে-প্রথমে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন আর তারপরে নীরব হয়ে যান’। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অসাড়, হতবাক এবং কম্পিত হয়ে পড়েছি’।

    সংবাদপত্রটি জানিয়েছে, মঙ্গলবার তারা যখন বিলকিস বানুর সঙ্গে যোগাযোগ করে তখন তিনি বলেন, ‘দয়া করে আমাকে একা থাকতে দিন… আমি আমার মেয়ে সালেহার (হত্যার শিকার হওয়াদের মধ্যে ৩ বছরের এই শিশুও ছিল) জন্য দোয়া পড়ছি’।

    অপরাধের ব্যাপকতা এবং বিচারের জন্য লড়াই বিবেচনায় নিলে পরিবারটির ক্ষোভ ও হতাশা সহজেই বোঝা যায়। দাঙ্গার সময়ে ঘটে যাওয়া অপরাধগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ছিল বিলকিস বানু ও তার পরিবারের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অপরাধ। গোধরা শহরে ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডে ৬০ হিন্দু তীর্থ যাত্রী নিহত হওয়ার পর এই দাঙ্গা শুরু হয়।

    আগুন জ্বালিয়ে দেওয়ার জন্য মুসলিমদের দায়ী করে সংঘবদ্ধ হিন্দু গ্রুপ তাণ্ডব চালানো শুরু করে। মুসলিম এলাকাগুলোতে চলে অবিরাম হামলা। তিন দিন ধরে চলা এই তাণ্ডবে এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়। এরমধ্যে বেশিরভাগই মুসলিম।

    গুজরাট দাঙ্গা। ছবি: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

    ওই সময়ে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকা নরেন্দ্র মোদি ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন। অভিযোগ ওঠে ধ্বংসযজ্ঞ ঠেকাতে যথেষ্ট ব্যবস্থা নেননি তিনি। তবে বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। দাঙ্গার জন্য কখনো ক্ষমা প্রার্থনাও করেননি তিনি।

    ২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্টের একটি প্যানেল জানিয়ে দেয় নরেন্দ্র মোদিকে বিচারের আওতায় আনার মতো যথেষ্ট প্রমাণ নেই। তবে সমালোচকরা অভিযোগ চালিয়ে যেতে থাকে যে, তার তত্ত্বাবধানেই দাঙ্গা চলেছে।

    বহু বছর পরে দাঙ্গায় জড়িত অনেককেই দণ্ড দিয়েছে আদালত। তবে হাই-প্রোফাইল অভিযুক্তদের কয়েক জন জামিন পেয়ে যায় কিংবা উচ্চ আদালতে খালাস পেয়ে যায়। এদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও মোদির সহকারি মায়া কোদনানি। বিচারিক আদালত তাকে ‘দাঙ্গার কেন্দ্রীয় ব্যক্তি’ আখ্যা দেয়।

    আর এখন বিলকিস বানুর সঙ্গে অপরাধ করা পুরুষেরাও মুক্ত হয়ে গেছে। ২০১৭ সালের মে মাসে বিলকিস বানুর সঙ্গে দিল্লির একটি সেফ হাউজে দেখা করেন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদক গীতা পাণ্ডে। ওই সময়ে তার মামলায় দণ্ডিত ১১ আসামির যাবজ্জীবন দণ্ড নিশ্চিত করে মুম্বাই হাই কোর্ট।

    কান্না আটকাতে আটকাতে বিলকিস বানু তখন সেই ভয়াবহ হামলার স্মৃতি বর্ণনা করেন। ওই সময়ে ১৯ বছরের বিলকিস বানুর গর্ভে ছিল নিজের দ্বিতীয় সন্তান।

    ট্রেনে যেদিন আগুন লাগে তারপর দিন সকালে গোধরা শহরের কাছে রাধিকপুর গ্রামে বাবা-মায়ের কাছে ছিলেন বিলকিস বানু। সঙ্গে ছিল নিজের তিন বছরের মেয়ে। বিলকিস বানু বলেন, দুপুরের খাবার রান্না করতে রান্নাঘরে ছিলাম, ‘তখন দৌড়ে আসে আমার চাচী এবং তার ছেলেমেয়েরা। তারা বললো তাদের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে আর আমাদের এখনই পালিয়ে যেতে হবে। পরনের কাপড় নিয়ে রওনা দেই, এমনকি পায়ে স্যান্ডেলও দিতে পারিনি’।

    ট্রেনি অগ্নিকাণ্ড থেকে দাঙ্গার শুরু। ছবি: নিউ ইয়র্ক টাইমস

    নিজের মেয়ে, মা, গর্ভবর্তী চাচাতো বোন, ছোট সহোদর, ভাইপো-ভাইঝি এবং দুই প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ মিলিয়ে বিলকিস বানুরা ছিলেন মোট ১৭ জন। পরের কয়েক দিন ধরে তারা গ্রাম থেকে গ্রামে ছুটে বেড়িয়েছেন। মসজিদে আশ্রয় নিয়েছেন কিংবা হিন্দুদের দয়ার ওপর নির্ভর করেছেন।

    ৩ মার্চ সকালে তারা অপেক্ষাকৃত নিরাপদ বলে বিবেচনা করা আরেকটি গ্রামে রওনা দেন। একদল পুরুষ তাদের থামায়। বিলকিস বানু বলেন, ‘তারা আমাদের ওপর তলোয়ার এবং লাঠি নিয়ে হামলা চালায়। তাদের একজন আমার কোল থেকে মেয়েকে কেড়ে নেয় আর মাটিতে আছাড় দেয়। পাথরে আঘাত করে তার মাথা গুঁড়িয়ে দেয়’।

    আক্রমণকারীরা ছিল তার গ্রামের প্রতিবেশি। বড় হওয়ার সময়ে প্রায় প্রতিদিনই এসব পুরুষকে দেখেছেন তিনি। তারাই তার পোশাক ছিঁড়ে ফেলে আর কয়েক জন তাকে ধর্ষণ করে। ক্ষমার আবেদন জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি।

    পালাতে শুরু করার দুই দিন আগে এক সন্তানের জন্ম দেয় তার চাচাতো বোন। তাকেও ধর্ষণ ও খুন করা হয়। ছাড়া হয়নি নবজাতককে। তাকেও খুন করা হয়।

    বিলকিস বানু বেঁচে যান। কারণ অচেতন হয়ে পড়লে আক্রমণকারীরা তাকে মৃত ভেবে ফেলে যায়। এছাড়া ওই ঘটনায় বেঁচে যায় কেবল সাত ও চার বছরের দুইটি ছেলে শিশু।

    বিচারের জন্য বিলকিস বানুর লড়াই ছিল দীর্ঘ আর ভীতিকর। ভালভাবে নথিভুক্ত রয়েছে যে, কিছু পুলিশ এবং রাজ্য কর্মকর্তারা তাকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে, প্রমাণ ধ্বংস করে এবং ময়নাতদন্ত ছাড়াই মৃতদের দাফন করা হয়। তাকে যে ডাক্তার পরীক্ষা করে, তিনি জানিয়ে দেন তাকে ধর্ষণ করা হয়নি। এছাড়া প্রতিদিন মৃত্যুর হুমকি পেতে থাকেন বিলকিস বানু।

    এই মামলায় প্রথম গ্রেফতার করা হয় ২০০৪ সালে। ভারতের সুপ্রিম কোর্ট মামলাটি কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার কাছে হস্তান্তরের পর এই গ্রেফতার করা হয়। ভারতের শীর্ষ আদালত সম্মত হয় গুজরাটের আদালতে বিচার পাবেন না তিনি। আর সেকারণেই মামলাটি মুম্বাইয়ে স্থানান্তর করা হয়।

    বিচারের জন্য বিলকিস বানুর লড়াইয়ের জন্য তার পরিবারকেও ভুগতে হয়েছে। বহুবার তাদের বাড়ি পাল্টাতে হয়েছে। তার স্বামী বলেন, ভয়ে এখনও আমরা বাড়ি যেতে পারি না। পুলিশ এবং রাজ্য প্রশাসন সবসময় হামলাকারীদের সহায়তা করেছে। গুজরাটে গেলে এখনও আমাদের মুখ ঢাকতে হয়। কখনও ঠিকানা প্রকাশ করতে পারি না।

    বিচারের সময় বিলকিস বানুর ওপর হামলাকারীদের মৃত্যুদণ্ডের দাবি ওঠে। তবে মুম্বাই হাই কোর্ট আসামিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। বিলকিস বানু তখনও বলেছিলেন, ‘আমি প্রতিশোধে আগ্রহী নই, শুধু চাই তারা বুঝুক তারা কী করেছে’। তিনি বলেন, আশা করি একদিন তারা তাদের অপরাধের ব্যাপকতা বুঝবে, কিভাবে তারা ছোট শিশু হত্যা করেছে আর নারী ধর্ষণ করেছে’। তবে তিনি এও জানান, ‘আসামিরা তাদের বাকি জীবন কারাগারে কাটাক’ সেটা দেখতে চান তিনি।

    মঙ্গলবার বিলকিস বানুর স্বামী ইয়াকুব রসুল জানান তার স্ত্রী বিষণ্ন এবং হতাশ হয়ে পড়েছেন। তিনি বলেন, ‘যে লড়াই আমরা এতো বছর ধরে করেছি তা এক মুহূর্তেই শেষ করে দেওয়া হয়েছে। আমরা এই খবর হজম করার সময়ও পাইনি আর আমরা জানি দোষীরা ইতোমধ্যে তাদের বাড়িতে পৌঁছে গেছে’।

    Share this...

    বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বে-আইনি।
    ঢাকা অফিসঃ ১৬৭/১২ টয়েনবি সার্কুলার রোড, মতিঝিল ঢাকা- ১০০০ আঞ্চলিক অফিস : উত্তর তেমুহনী সদর, লক্ষ্মীপুর ৩৭০০
    biggapon ad advertis বিজ্ঞাপন এ্যাড অ্যাডভার্টাইজ  
  • আমাদেরকে ফলো করুন…